মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
বান্দরবানের লামা উপজেলার বিভিন্ন পাহাড় খূঁড়ে পাথর উত্তোলন, বারুদের বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে পাথর সংগ্রহ ও পাচার অব্যাহত রেখেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সরকারী দলের ক্যাডারদের ছত্র-ছায়ায় পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলার কতিপয় প্রভাবশালী পাথর পাচারকারী চক্র এ পাচার অব্যাহত রেখেছে। নিয়মিত মাসোয়ারা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিরবতার ভূমিকা পালন করছে বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। অতিমাত্রায় পাথর উত্তোলনের ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চল মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে বলে পরিবেশবিদরা মনে করেন।
অভিযোগ রয়েছে, লামা উপজেলার ক্যায়ারাঝিরি, লাইনঝিরি, ইয়াংছা, বনফুর, বধূরঝিরি, হরিনঝিরি, ফাঁসিয়াখালী, কাঁঠালছড়া, নন্দিরবিল, সাপমারাঝিরি, শিলেরতুয়া, মিরিঞ্জা এলাকার বিভিন্ন পাহাড় খূঁড়ে ও বারুদের বিষ্ফোরন ঘটিয়ে পাথর উত্তোলন পূর্বক পাচার অব্যাহত রেখেছে সিন্ডিকেটটি। যখন যে সরকার আসে সে সরকারের কতিপয় ক্যাডাররা এ ব্যাবসার সাথে জড়িয়ে পড়ার কারনে অনেক সময় প্রশাসন থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন সম্ভব হয়না। সরজমিনে ঘুরে জানা যায়, কিছুসংখ্যাক ব্যাবসায়ী জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে নাম মাত্র পাথরের পারমিট করে সমগ্র লামা উপজেলা থেকে পাথর সংগ্রহ করে। এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানে বর্তমানে কোন পাথরের পারমিট অনুমোদন দেয়া হয়নি। যে সব পারমিট দেয়া হয়েছে ইতিমধ্যে সকল পারমিটের মেয়াদ উর্ত্তীণ হয়েছে বলেও তিনি জানান। পাথর উত্তোলনের পর তা পরিবহনের সময় জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের কোন প্রকার চেকিং ব্যবস্থা না থাকায় এক সময় কোয়ারীর পাথর শেষ হয় কিন্তু তাদের ভুয়া পারমিট শেষ হয়না ! অভিযোগ রয়েছে, জেলা প্রশাসক থেকে কোন মতে একটি ঝিরি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি মিললেই এলাকার যত ঝিরি আছে সকল ঝিরি ও পাহাড়ের পাথর প্রতিযোগীতামূলক উত্তোলন শুরু হয়ে যায়।
বিনা বাঁধায় ঝিরি ও পাহাড় খূঁড়ে পাথর উত্তোলনের ফলে এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির অভাব। শুষ্ক মৌসুমে নলকুপ ও রিংওয়েলে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়। পাহাড় খূঁড়ে পাথর উত্তোলনের কারণে ঝিরি ও পাহাড়ের মাটি এসে মাতামুহুরী নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদীতে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। ফলে প্রতি বছর পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় জেলার লাখ লাখ মানুষের জান মালের ক্ষতি হয়। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী পাহাড়ী বাঙ্গালীরা সব মৌসুমে (বর্ষা ব্যাতিত) পড়ছে তীব্র পানি সংকটে।
বারুদের বিষ্ফোরন ঘটিয়ে পাথর ফাটাতে গিয়ে গত ২০/২৫ বছরে প্রায় ১৫০/২০০ পাথর শ্রমিক নিহত-আহত হয়। কিন্তু পাথর পাচারকারীদের কাছ থেকে তেমন একটা সাহায্য সহযোগীতা মিলছেনা বলে জানায় আহতের পরিবার। লামা উপজেলার শিলেরতুয়া মার্মা পাড়ার চিহ্লামং মার্মা ও হরিনঝিরি এলাকার নুরুননবী জানান, ঝিরি-পাহাড় খূঁড়ে ও বারুদের বিষ্ফোরন ঘটিয়ে পাথর উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমরা বেশ কয়েকবার লেখালেখি করেও কোন সুরাহা পাইনি। বরং পাচারকারী চক্ররা আমাদের প্রাননাশের হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় লামা হরিণঝিরি হয়ে কাঁঠালছড়া ইয়াংছা দিয়ে পাথর ব্যবসায়ীরা শত শত পাহাড় কেটে গোপন রাস্তা বানিয়ে প্রতিনিয়ত ট্রাক, ট্রাক্টর দিয়ে লাখ লাখ ঘনফুট পাথর পাচার করছে। এই সব অতিমাত্রায় ভারী পরিবহনের জন্য সরকারের কোটি টাকার তৈরি পাঁকা ও আধাপাঁকা রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লামা উপজেলার আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে অবৈধ পাথর আহরনের হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
পাথর ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম কমিয়ে পাহাড় খুঁড়ে পাথর আহরণ বন্ধ করে পার্বত্য অঞ্চলের জীব বৈচিত্র ধবংস সহ পরিবেশ বিপন্ন হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে এলাকাবাসী।
প্রকাশ:
২০১৬-০৫-১৯ ০৭:৩০:৪৩
আপডেট:২০১৬-০৫-১৯ ০৭:৩০:৪৩
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে সাঈদী
- রামুতে পাহাড়ি ছড়ায় গোসল করতে গিয়ে ২ শিশুর মৃত্যু
- চকরিয়ায় ধান ক্ষেত থেকে লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার, পরে অবমুক্ত
- পেকুয়ায় চেয়ারম্যান পদে চমক দেখাতে পারে নারী প্রার্থী রুমানা আক্তার, গণসংযোগে গণজোয়ার
- চকরিয়ায় শাখাখালের তীর থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১১৪ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১০৩ জন ভোটা
- রামুতে গাড়িযোগে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ যুবক আটক
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: লড়াই চলছে শেয়ানে শেয়ানে
- চকরিয়া-পেকুয়ায় দুই লবণ চাষী নিহত, উড়ে গেছে বসতঘর
- চকরিয়ায় চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থীর মাঝে প্রতীক বরাদ্দ
- চকরিয়ায় প্রভাবশালীর কাছে জিম্মি অসহায় পরিবার
- চকরিয়ায় শাখাখালের তীর থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- পেকুয়ায় চেয়ারম্যান পদে চমক দেখাতে পারে নারী প্রার্থী রুমানা আক্তার, গণসংযোগে গণজোয়ার
- রামুতে গাড়িযোগে পাচারকালে ২০ হাজার ইয়াবাসহ ২ যুবক আটক
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১১৪ টি ভোট কেন্দ্রে মোট ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১০৩ জন ভোটা
- চকরিয়ায় ধান ক্ষেত থেকে লম্বা অজগর সাপ উদ্ধার, পরে অবমুক্ত
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে সাঈদী
- রামুতে পাহাড়ি ছড়ায় গোসল করতে গিয়ে ২ শিশুর মৃত্যু
পাঠকের মতামত: